ঢাকা ১২:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গোবিন্দগঞ্জে সরকারি ঔষধ বিক্রি হচ্ছে প্রধান শিক্ষকের ফার্মেসিতে

 

আল মুমিন সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টর, গাইবান্ধা:

ঔষধের গায়ে লেখা রয়েছে “পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সম্পদ, বিক্রয়ের জন্য নহে”। এরপরও রমরমা ব্যবসা চলছে বিক্রি নিষিদ্ধ এসব ঔষধের। সরকারি হাসপাতালের অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাধ্যমে জনসাধারণের জন্য সরকারি বরাদ্দের বেশীরভাগ ঔষধই চলে যাচ্ছে খোলাবাজারে। যা উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে ফার্মেসিগুলোতে।

সম্প্রতি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের ক্রোড়গাছা বাজারে অবস্থিত একটি ফার্মেসিতে সরকারি হাসপাতালের মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রি করা হয়। একজন রোগী সেই ঔষধ সেবনে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে মূলত এরপরই সরকারি ঔষধের বিষয়টি জানাজানি হয়। চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এলাকাজুড়ে। সরকারি হাসপাতালের ঔষধ বিক্রির ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

জানা গেছে, লাজু মন্ডল সোনাই ডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে চাকরির পাশাপাশি ক্রোড়গাছা বাজারে একটি ঔষধের ফার্মেসি পরিচালনা করে আসছেন। তবে ওই ফার্মেসির কোন ড্রাগ লাইসেন্স নেই। তিনি ঔষধ বিক্রির পাশাপাশি নিয়মিত রোগী দেখেন।

অভিযোগ উঠেছে, লাজু মন্ডলের ফার্মেসি থেকে প্রতিদিনই হাসপাতালের সরকারি ঔষধ বিক্রি করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিকালে পাতিলাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলামের ছেলে মমিন ইসলাম ঔষধ কেনার জন্য ওই ফার্মেসিতে যান। সেখান থেকে কৃমির ঔষধ কিনে বাড়ি ফিরে রাতে খাওয়ার পর সেই ঔষধ সেবন করেন। কিছুক্ষণ পরে মাথা ঘোরা ও বমি ভাব অনুভূত হয়। এক পর্যায়ে বমি শুরু হলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। অবস্থার অবনতি হলে মধ্য রাতে তাকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে তিনি পরের দিন দুপুরে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন।

ভুক্তভোগী মমিন ইসলাম বলেন, ফার্মেসী থেকে ৫টি ট্যাবলেট ২৫ টাকা দিয়ে কিনেছি। লাজু মাষ্টারকে সরকারি ঔষধ বিক্রির ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি টাকা দিয়ে কিনে এনেছেন বলে জানান।

এসব অভিযোগ সম্পর্কে মুঠোফোনে জানতে চাইলে ফার্মেসির মালিক সোনাই ডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাজু মন্ডল কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মাসুদার রহমান আকন্দ খোলাবাজারে সরকারি হাসপাতালের ঔষধ বিক্রির বিষয়ে বলেন, সরকারি ঔষধ বিক্রি গুরুতর অপরাধ। আমাদের হাসপাতাল থেকে ঔষধ বাইরে চলে গেছে এটা আগেই বলা যাবে না। তারপরও খোঁজ নিয়ে দেখছি। যে ফার্মেসিগুলো সরকারি ঔষধ বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগঃ

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সর্বাধিক পঠিত

সারিয়াকান্দি পুরাতন ব্যাটারী আগুনে জ্বালিয়ে সিসা তৈরি হুমকির মুখে প্রাকৃতিক পরিবেশ জীব ও বৈচিত্র্য

গোবিন্দগঞ্জে সরকারি ঔষধ বিক্রি হচ্ছে প্রধান শিক্ষকের ফার্মেসিতে

প্রকাশের সময়ঃ ০২:২৩:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

 

আল মুমিন সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টর, গাইবান্ধা:

ঔষধের গায়ে লেখা রয়েছে “পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সম্পদ, বিক্রয়ের জন্য নহে”। এরপরও রমরমা ব্যবসা চলছে বিক্রি নিষিদ্ধ এসব ঔষধের। সরকারি হাসপাতালের অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাধ্যমে জনসাধারণের জন্য সরকারি বরাদ্দের বেশীরভাগ ঔষধই চলে যাচ্ছে খোলাবাজারে। যা উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে ফার্মেসিগুলোতে।

সম্প্রতি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের ক্রোড়গাছা বাজারে অবস্থিত একটি ফার্মেসিতে সরকারি হাসপাতালের মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রি করা হয়। একজন রোগী সেই ঔষধ সেবনে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে মূলত এরপরই সরকারি ঔষধের বিষয়টি জানাজানি হয়। চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এলাকাজুড়ে। সরকারি হাসপাতালের ঔষধ বিক্রির ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

জানা গেছে, লাজু মন্ডল সোনাই ডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে চাকরির পাশাপাশি ক্রোড়গাছা বাজারে একটি ঔষধের ফার্মেসি পরিচালনা করে আসছেন। তবে ওই ফার্মেসির কোন ড্রাগ লাইসেন্স নেই। তিনি ঔষধ বিক্রির পাশাপাশি নিয়মিত রোগী দেখেন।

অভিযোগ উঠেছে, লাজু মন্ডলের ফার্মেসি থেকে প্রতিদিনই হাসপাতালের সরকারি ঔষধ বিক্রি করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিকালে পাতিলাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলামের ছেলে মমিন ইসলাম ঔষধ কেনার জন্য ওই ফার্মেসিতে যান। সেখান থেকে কৃমির ঔষধ কিনে বাড়ি ফিরে রাতে খাওয়ার পর সেই ঔষধ সেবন করেন। কিছুক্ষণ পরে মাথা ঘোরা ও বমি ভাব অনুভূত হয়। এক পর্যায়ে বমি শুরু হলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। অবস্থার অবনতি হলে মধ্য রাতে তাকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে তিনি পরের দিন দুপুরে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন।

ভুক্তভোগী মমিন ইসলাম বলেন, ফার্মেসী থেকে ৫টি ট্যাবলেট ২৫ টাকা দিয়ে কিনেছি। লাজু মাষ্টারকে সরকারি ঔষধ বিক্রির ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি টাকা দিয়ে কিনে এনেছেন বলে জানান।

এসব অভিযোগ সম্পর্কে মুঠোফোনে জানতে চাইলে ফার্মেসির মালিক সোনাই ডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাজু মন্ডল কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মাসুদার রহমান আকন্দ খোলাবাজারে সরকারি হাসপাতালের ঔষধ বিক্রির বিষয়ে বলেন, সরকারি ঔষধ বিক্রি গুরুতর অপরাধ। আমাদের হাসপাতাল থেকে ঔষধ বাইরে চলে গেছে এটা আগেই বলা যাবে না। তারপরও খোঁজ নিয়ে দেখছি। যে ফার্মেসিগুলো সরকারি ঔষধ বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।