
বগুড়া জেলার ধুনট থানার মহিশুরা গ্রামের বাসিন্দা শাফিকুল ইসলাম একজন কুখ্যাত প্রতারক হিসেবে আলোচনায় উঠে এসেছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিভিন্ন নারীর জীবন ধ্বংস করে চলেছেন। তার প্রতারণার শিকার এক ভুক্তভোগী স্ত্রী মিম আক্তারের মর্মস্পর্শী বক্তব্য থেকে উঠে এসেছে শাফিকুলের অমানবিক ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের চিত্র।
মিম আক্তারের ভাষ্যমতে, শাফিকুল দীর্ঘ তিন বছর ধরে তাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তার সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে গেছে। এই সম্পর্ক থেকে তাদের একটি সন্তানও জন্মগ্রহণ করেছে। কিন্তু শাফিকুল বিয়ের প্রতিশ্রুতি রাখেনি। বরং, সে মিমের কাছ থেকে দূরে সরে গিয়ে আরও একটি প্রতারণার ফাঁদ পাতার উদ্দেশ্যে অজানা স্থানে উধাও হয়ে গেছে।
শুধু তাই নয়, শাফিকুল তার সন্তানকে চুরি করে কোথাও লুকিয়ে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন মিম। সন্তানকে ফিরিয়ে দেওয়ার পরিবর্তে সে মিমকে ফোনে হুমকি দিচ্ছে এবং তিন লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করছে। মিম জানান, ফোনে তার কথোপকথন রেকর্ড করার মতো প্রমাণ সংরক্ষণ না করতে পারলেও, এ বিষয়ে বহু মানুষের সাক্ষ্য রয়েছে।
মিম আক্তার আরও জানান, শাফিকুল ইসলাম বিভিন্ন জায়গায় বিয়ে করে ছয় মাস থেকে এক বছর সময় অতিবাহিত করার পর স্ত্রীদের থেকে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর সে নতুন শিকারের সন্ধানে আরেকটি জায়গায় গিয়ে একই প্রতারণার কৌশল প্রয়োগ করে। এই পদ্ধতিতে সে বহু নারীকে প্রতারিত করেছে, তাদের জীবন ধ্বংস করেছে।
মিম আক্তার শাফিকুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “শাফিকুল যেন আর কারো সঙ্গে এমন প্রতারণা করতে না পারে, তার জন্য প্রশাসন ও সমাজের সহযোগিতা প্রয়োজন। আমি একজন অসহায় মা, আমার সন্তানকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সবার কাছে সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছি।”
এ ধরনের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড শুধু ব্যক্তি নয়, সমাজের জন্যও একটি মারাত্মক হুমকি। মিম আক্তারের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, শাফিকুলের মতো অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আরও অনেক নারী তার শিকার হতে পারেন।
স্থানীয় প্রশাসনের উচিত মিম আক্তারের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করা এবং শাফিকুলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া। পাশাপাশি, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের এগিয়ে এসে মিমের মতো অসহায় নারীদের সাহায্য করা জরুরি।
শাফিকুল ইসলামের প্রতারণার ঘটনাগুলো আমাদের সমাজে নারীদের প্রতি ঘটে চলা অন্যায়ের একটি উদাহরণ মাত্র। এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হলে আইনের কঠোর প্রয়োগ ও সামাজিক সচেতনতার প্রয়োজন। প্রতারণার শিকার মিম আক্তারের মতো অসহায় নারীদের জন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
“অপরাধী শাস্তি পাবে, সমাজে শান্তি ফিরে আসবে”—এই প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে আমরা যেন মিম আক্তারের মতো ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার পাইয়ে দিতে পারি।